রাষ্ট্রপতি বিতর্ক এর পর বাইডেন শিবিরে হতাশা, ট্রাম্প শিবির হাস্যোজ্জল

//দৈনিক বিশ্ব আন্তর্জাতিক ডেস্ক//

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রথম মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নিলেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিতর্কে বিভিন্ন বিষয়ে তাঁরা পরস্পরকে আক্রমণ করেন। আক্রমণ ব্যক্তিগত পর্যায়ে চলে যায়।

তবে বিতর্কে বাইডেন ভালো করতে পারেননি। এ নিয়ে তাঁর নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যে হতাশা দেখা গেছে।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাইডেনের বিতর্ক শীর্ষস্থানীয় ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে বিপদঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে।

অবশ্য বাইডেন মনে করেন, তিনি ভালোই করেছেন। একই সঙ্গে বলেন, একজন মিথ্যাবাদীর সঙ্গে বিতর্ক করা কঠিন।

অন্যদিকে বিতর্ক শেষ হওয়ার আগেই ট্রাম্পের প্রচারশিবির তাঁর জয় দাবি করে। মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকান দলের নেতা স্টিভ স্কালিস এক বিবৃতিতে বলেছেন, ট্রাম্প বিতর্কে জয়ী হয়েছেন। বাইডেন আরেক মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার উপযুক্ত নন। ট্রাম্পই আগামী ৫ নভেম্বরের নির্বাচনের একমাত্র পছন্দের প্রার্থী।

ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টারা বিতর্কের সময় তাঁর (ট্রাম্প) নৈপুণ্য উদ্‌যাপন করেছেন। বাইডেনকে নিয়ে আসা প্রতিক্রিয়া তাঁরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। ডেমোক্র্যাটদের দিক থেকে আসা ব্যাপক উদ্বেগের দিকটি তাঁদের নজরে এসেছে।

ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতাদের কেউ কেউ মনে করছেন, ট্রাম্পকে শক্তভাবে মোকাবিলা করতে পারেননি বাইডেন। এই সুযোগে ট্রাম্প অনর্গল মিথ্যা বলে গেছেন।

বাইডেন প্রশাসনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস নিজেও স্বীকার করেছেন, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী (বাইডেন) ধীরগতিতে শুরু করেছিলেন। তবে পরে দৃঢ়ভাবে বিতর্ক শেষ করতে পেরেছেন। ভোটারদের বাইডেনের কৃতিত্বের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত, বিতর্কের দিকে নয়।

আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেন লড়বেন ডেমোক্রেটিক পার্টির হয়ে। আর রিপাবলিকান পার্টির হয়ে লড়বেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল ৭টায়) সিএনএনের আটলান্টা স্টুডিওতে বিতর্কে অংশ নেন বাইডেন ও ট্রাম্প। চার বছর পর তাঁরা প্রথমবারের মতো মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নেন। বিতর্ক মঞ্চে উঠলে প্রথা অনুসারে করমর্দন করেননি তাঁরা। প্রায় দেড় ঘণ্টার বিতর্কে ট্রাম্প ৪০ মিনিট ১২ সেকেন্ডের মতো কথা বলেন। অপর দিকে বাইডেন কথা বলেন ৩৫ মিনিট ৪১ সেকেন্ড।

বাইডেন-ট্রাম্পের বিতর্কে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, গণতন্ত্র, অভিবাসন, সীমান্ত সংকট, গর্ভপাত, সামাজিক নিরাপত্তা, মূল্যস্ফীতি, কর, কর্মসংস্থান, জাতীয় ঋণ, স্বাস্থ্যসেবা, জলবায়ু, গাজা ও ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বিষয় উঠে আসে। বিভিন্ন বিষয়ে বলতে গিয়ে তাঁরা পরস্পরকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন।

অর্থনীতি

মার্কিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দুজন দুজনকে দোষারোপ করেন। বাইডেন দাবি করেন, তিনি ট্রাম্পের রেখে যাওয়া নাজুক অর্থনীতি পেয়েছেন। অন্যদিকে ট্রাম্পের দাবি, বাইডেন উত্তরাধিকার সূত্রে একটি ভালো অর্থনীতি পেয়েছেন।

সীমান্ত সংকট

বাইডেনের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত সংকটে কেন ভোটাররা তাঁর ওপর আস্থা রাখবেন। জবাবে বাইডেন বলেন, মার্কিন কংগ্রেসে একটি দ্বিদলীয় সীমান্ত বিল পাস করার জন্য তাঁর প্রশাসন অনেক চেষ্টা করেছে। অভিবাসন নিয়ে ট্রাম্পের আমলের নানা পদক্ষেপের সমালোচনা করেন বাইডেন। তিনি বলেন, তখন এমন একটি পরিস্থিতি দেখা যায়, যেখানে অভিবাসনপ্রত্যাশী মায়েদের কাছ থেকে তাঁদের শিশুদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। শিশুদের আলাদা করছিলেন। শিশুদের খাঁচায় রাখছিলেন। পরিবারগুলোর পৃথককরণ নিশ্চিত করেছিলেন। এটা সঠিক উপায় নয়। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে সহিংস অপরাধের জন্য বাইডেনের অভিবাসননীতিকে দায়ী করেন ট্রাম্প।

ক্যাপিটল হিলে হামলা

২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলার জন্য ট্রাম্পকে দায়ী করেন বাইডেন। তিনি বলেন, ক্যাপিটল হিলে যেতে লোকজনকে উৎসাহিত করেছিলেন ট্রাম্প। তিনি বসে বসে সেদিনের ঘটনা দেখেছেন। ট্রাম্প বলেন, সেদিন তাঁর কার্যত কিছুই করার ছিল না।

গাজা যুদ্ধ

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধের অবসান ঘটাতে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সমর্থন করবেন কি না, এই প্রশ্নে সরাসরি কোনো উত্তর দেননি ট্রাম্প। বাইডেনকে প্রশ্ন করা হয়, এই যুদ্ধ শেষ করতে তিনি কী করবেন। উত্তরে বাইডেন বলেন, হামাসই এই যুদ্ধের শেষ চায় না। বাইডেন ইসরায়েলের প্রতি তাঁর জোরালো সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

ইউক্রেন যুদ্ধ

বিতর্কে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ উঠে আসে। বাইডেন বলেন, তিনি মনে করেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একজন যুদ্ধাপরাধী। তিনি পুরোনো সোভিয়েত সাম্রাজ্য আবার প্রতিষ্ঠা করতে চান। ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থের চেয়ে বেশি অস্ত্র দেওয়ার কথা জোরালোভাবে বলেন বাইডেন। ট্রাম্প বলেন, তিনি নির্বাচনে জিতলে ইউক্রেনে যুদ্ধ থামাবেন। ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে পুতিনের শর্ত নিয়ে ট্রাম্পকে প্রথমে একবার প্রশ্ন করেন সঞ্চালক। প্রথমবার ট্রাম্প উত্তর এড়িয়ে যান। এরপর দ্বিতীয়বার ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, পুতিনের শর্তগুলো তাঁর কাছে গ্রহণযোগ্য কি না? জবাবে ট্রাম্প বলেন, গ্রহণযোগ্য নয়।

মামলা

ট্রাম্পের ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়া নিয়ে তাঁকে তীব্র আক্রমণ করেন বাইডেন। তিনি ট্রাম্পের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এ নিয়ে তিনি ট্রাম্পকে ‘কটূক্তি’ করেন। ট্রাম্পকে একজন দোষী সাব্যস্ত অপরাধী হিসেবে উল্লেখ করেন বাইডেন। বিতর্কের একপর্যায়ে বাইডেন বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যে একাধিক মামলা রয়েছে, সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। প্রকাশ্যে এক নারীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে ট্রাম্পকে যে আদালত জরিমানা করেছেন, সে কথা তোলেন বাইডেন। ট্রাম্প বিস্তর অপরাধ করেছেন বলে বাইডেন অভিযোগ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ট্রাম্প রাতে এক পর্ন তারকার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করেন, অথচ তখন ঘরে তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

বয়স

বয়স নিয়ে বাইডেন বলেন, ট্রাম্প তাঁর চেয়ে মাত্র কয়েক বছরের ছোট। তবে তিনি (ট্রাম্প) অনেক কম দক্ষ। বাইডেন ভোটারদের ট্রাম্পের রেকর্ড দেখার জন্য আহ্বান জানান। প্রতিক্রিয়ায় বাইডেনের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে ট্রাম্প দুজনের জ্ঞানীয় ক্ষমতার পরীক্ষার কথা বলেন।

 

পাঠাও-এর প্রতিষ্ঠাতা ফাহিমকে হত্যা করে তার পিএ হাসপিল- চুরি করে নেয় মিলিয়ন ডলার – জানুন বিস্তারিত

//দৈনিক বিশ্ব আন্তর্জাতিক ডেস্ক//

নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে নিজ অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বাংলাদেশের রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাও-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহর ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২০২০ সালের ১৪ জুলাই তার লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় তার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী টায়রেস হাসপিল (২৫) দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।

সোমবার (২৬ জুন) নিউইয়র্কের ম্যানহাটন সুপ্রিম কোর্টের বিচারকেরা হাসপিলকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন।

আদালতের এই রায়ের আগে হাসপিল দাবি করেছিলেন, ফরাসি প্রেমিকাকে খুশি করার জন্য দামি উপহার কেনার জন্য ফাহিমের টাকা চুরি করেন। চুরির কথা প্রকাশ পেলে প্রেমিকা তাকে ছেড়ে চলে যেত—তাই তিনি ফাহিমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তবে বিচারকেরা তার এই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন।

তবে কেন বিচারকেরা হাসপিলের দাবি খারিজ করে দিয়েছেন তা হত্যার দীর্ঘ পরিকল্পনা ও হত্যাকাণ্ডের ধরনেই বোঝা যায়। হাসপিল কতটা শীতল রক্তের অধিকারী ছিলেন তা তার পরিকল্পনা ও হত্যার কায়দায় ফুটে উঠেছে। আদালতের রায়ের বিবরণীতে সেসব বিস্তারিত উল্লেক করা হয়েছে।

হত্যার পরিকল্পনা

টাইরেস হাসপিল ২০১৮ সালে ফাহিম সালেহের টাকা চুরি করার পরিকল্পনা শুরু করেন। কিন্তু ২০২০ সালের জুলাইয়ে এসে তার পরিকল্পনাটি হত্যার সিদ্ধান্তে রূপ নেয়।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসপিল ফরাসি প্রেমিকার জন্য দামি উপহার কেনার জন্য সালেহের কোম্পানি থেকে টাকা চুরি করেন।

হাসপিল টাকা চুরির জন্য একটি ভুয়া করপোরেট আইডি এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছিলেন। তবে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সালেহ টাকা চুরির বিষয়টি বুঝতে পারেন। হাসপিল তখন চুরির টাকা পরিশোধে সম্মত হন। তবে পরে তিনি সেই অবস্থান থেকে সরে আসেন। একটি ভুয়া পেপ্যাল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ফাহিমের আরও টাকা চুরি করা শুরু করেন। এভাবে তিনি প্রায় ৪ লাখ মার্কিন ডলার চুরি করেন। একপর্যায়ে তিনি ফাহিমের সব টাকা নিয়ে বিলাসবহুল জীবনের আশায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

হাসপিল সোশ্যাল মিডিয়াতে সালেহের অবস্থানের ওপর নজরদারি শুরু করেন। হত্যাকাণ্ড গোপন করার জন্য কয়েক সপ্তাহ প্রযুক্তি, অস্ত্র, টেজার এবং রক্ত পরিষ্কার নিয়ে গবেষণা করেন। পরিচয় গোপন করার জন্য বিশেষ ধরনের পোশাক কেনেন, যাতে সালেহ তাঁকে চিনতে না পারেন।

অন্তত তিনটি পৃথক অনুষ্ঠানে জনাব সালেহকে হত্যার পরিকল্পনা করে হাসপিল। ২০২০ সালের মার্চে নাইজেরিয়ার লাগোসে সে ছুরি নিয়ে সালেহর পিছু নিয়েছিল। তবে হত্যা করেনি। এরপর নিউইয়র্কে ফিরে সালেহকে দুইবার হোপওয়েল জংশনেও পিছু নেন। সালেহর বাড়ি পুড়িয়ে ফেলার বা দৌড়ানোর সময় তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম হত্যায় ব্যক্তিগত সহকারী দোষী সাব্যস্তপাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম হত্যায় ব্যক্তিগত সহকারী দোষী সাব্যস্ত

২০২০ সালের মে মাসে হাসপিল সালেহকে তাঁর বাড়িতে হত্যা করবেন বলে ঠিক করেন। তিনি ঘাড়ে ছুরিকাঘাতে নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ১৭ জুন হাসপিল হোম ডিপো ঠিকাদার ব্যাগ, একটি সুইফার ওয়েটজেট এবং একটি করাত কেনেন।

হাসপিল সালেহের বাসা থেকে রাস্তার অপর পার্শ্বের বিল্ডিংয়ে একটি খালি অ্যাপার্টমেন্টের কৌশলে প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি এমনভাবে নেস্ট ক্যামেরা বসান যাতে সালেহের বিল্ডিংয়ের যাবতীয় কিছু নজরদারি করা যায়।

হত্যাকাণ্ডের আগের দিনগুলোতে হাসপিল জাঁকজমকপূর্ণভাবে প্রেমিকার জন্মদিন পালন ও তাকে উপহার দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। তিনি পার্টি বেলুন, বড় কেক, বিলাসবহুল হ্যান্ডব্যাগ, জুতা, প্রাইভেট ইয়ট ট্যুর এবং চুরি করা টাকা দিয়ে সোহোতে একটি বিলাসবহুল এয়ানবিএনবি ভাড়া নেন।

হত্যাকাণ্ড

২০২০ সালের ১৩ জুলাই হাসপিল প্লাস্টিকের হেলমেট, বেসবল ক্যাপ এবং সানগ্লাস পরে সালেহের সঙ্গে তাঁর অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের লিফটে প্রবেশ করেন। এ সময় বেচারা সালেহ হাসপিলের এমন পোশাক দেখে কোভিড সতর্কতা নিয়ে তাঁর সঙ্গে রসিকতা করেছিলেন। তবে লিফটের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই হাসপিল আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন।

হাসপিল প্রথমে পেছন থেকে ফাহিম সালেহকে টেজার মেশিনের শক দিয়ে অজ্ঞান করে ফেলেন। এরপর তার ঘাড়ে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকেন।

হত্যাকাণ্ড গোপন করতে হাসপিল মিনি ভ্যাকুয়াম মেশিন দিয়ে অ্যান্টি-ফেলন আইডেন্টিফিকেশন ডিস্ক (এএফআইডি) শূন্য করে ফেলেন। কেননা ওই ডিস্কে একটি সিরিয়াল নম্বর থাকে যা অপরাধীকে শনাক্ত করতে পারে।

এরপর আনুমানিক বেলা ৩টায় হাসপিল অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে একটি উবারে করে নিউজার্সিতে যান। হাডসন নদীর জল কতটা গভীর ও সেখানে কীভাবে আলামত ডুবিয়ে দেওয়া যেতে পারে—তা নিয়ে তিনি আগেই গবেষণা করেন। ওই নদীতে তিনি পরের দিন একটি আবর্জনার ক্যানে অনেক আলামত ফেলে দেন।

হাসপিল পরের দিন ১৪ জুলাই সালেহর মরদেহ টুকরো টুকরো করতে এবং ঘটনাস্থল পরিষ্কার করতে অ্যাপার্টমেন্টে ফিরে আসেন। তারপরে তিনি করাত দিয়ে সালেহের শরীরকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলেন এবং সেগুলো আগেই কিনে রাখা ব্যাগে ভরেন। এ সময় করাতের ব্যাটারি ফুরিয়ে গেলে তিনি চার্জার কিনতে চলে যান।

হাসপিল যখন বাইরে যান তখন সালেহর কাজিন তাকে দেখতে এসেছিল কারণ বিগত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর কোনো সাড়া পায়নি। এ সময় তিনি অ্যাপার্টমেন্টে চাচাতো ভাইয়ের টুকরো টুকরো এবং শিরশ্ছেদ করা দেহ আবিষ্কার করেন এবং পুলিশকে ডাকেন।

এদিকে হোম ডিপো থেকে ফিরে আসার পর হাসপিল সালেহের অ্যাপার্টমেন্টে পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করেন এবং প্রেমিকার জন্মদিনের উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

হত্যার পরের দিনগুলোতে হাসপিল ‘খণ্ডিত দেহ’, ‘ফাহিম সালেহ’ এবং ‘নিউইয়র্কে টেক সিইওর হত্যা’ লিখে ওয়েব সার্চ করেন। এবং গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত হাসপিল সালেহর পেপাল থেকে টাকা আত্মসাৎ করতে থাকেন।

সাড়ে ৩৫ কোটি ডলার জরিমানা ট্রাম্পকে দিতে হবে প্রতারণা মামলায়

//দৈনিক বিশ্ব আন্তর্জাতিক ডেস্ক//

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিজের সম্পদের মূল্য বাড়িয়ে দেখানোর মাধ্যমে ঋণদাতাদের সঙ্গে প্রতারণা করার দায়ে ৩৫ কোটি ৪৯ লাখ ডলার জরিমানা করেছে নিউ ইয়র্কের একটি আদালত।

শুক্রবার বিচারক আর্থার এনগোরন এ রায় দেন। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন দৌঁড়ে এগিয়ে থাকা প্রার্থী ট্রাম্প আরেকটি মামলায় আইনি বিপর্যয়ের মুখোমুখি হলেন। এই রায়ে তার বিশাল আবাসন ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ম্যানহ্যাটনে তিন মাস ধরে চলা এ দেওয়ানি মামলার বিচারের রায়ে ট্রাম্পকে তিন বছরের জন্য নিউ ইয়র্কে কোনো কর্পোরেশনের পরিচালক বা কর্মকর্তা হওয়ার বিষয়েও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্পের আইনজীবী আলিনা হাবা।

নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশা জেমস এ মামলাটি দায়ের করেছিলেন। অভিযোগ ছিল, ট্রাম্প ও তার পরিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ট্রাম্প অর্গানাইজেশন ঋণের শর্তে সুবিধা পাওয়ার জন্য এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ব্যাংকারদের ধোঁকা দিয়ে বছরে তার মোট সম্পদের মূল্য প্রায় ৩৬০ কোটি ডলার বেশি দেখিয়েছেন।

ডেমোক্র্যাট লেটিশা জেমস রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে এসব অভিযোগ এনেছেন বলে দাবি ট্রাম্পের। তিনি আরও চারটি ফৌজদারি মামলার মোকাবিলা করছেন।

রায়ের পর নিজের সামাজিক মাধ্যম সোশ্যাল ট্রুথে করা এক পোস্টে ট্রাম্প বিচারক এনগোরনকে ‘কুটিল’ ও জেমসকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে উল্লেখ করেন। তার বিরুদ্ধে করা মামলাকে ‘নির্বাচনি হস্তক্ষেপ’ ও ‘ডাইনি খোঁজা’ বলে অভিহিত করেন।

রায়ে ট্রাম্পের দুই ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র ও এরিক ট্রাম্পকে ৪০ লাখ ডলার করে জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদের কোম্পানির সাবেক সিওও অ্যালান ওয়াইসেলবার্গকে জরিমানা করা হয় ১০ লাখ ডলার।

ট্রাম্প তিন বছর নিউ ইয়র্কে কোনো ব্যবসা করতে পারবেন না, আর তার দুই ছেলে দুই বছরের জন্য এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবেন। ট্রাম্প, তার কোম্পানি বা এই কোম্পানির অধিভুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠান তিন বছরের জন্য কোনো ঋণের আবেদন করতে পারবেন না।

বারবারা জোন্স ট্রাম্প কর্পোরেশনের স্বাধীন পর্যবেক্ষক হিসেবে আরও তিন বছর দায়িত্বপালন করবেন। তবে কোম্পানিটি সবচেয়ে বিপর্যয়কর শাস্তি এড়াতে পেরেছে, আদালত এর ব্যবসার লাইসেন্স বাতিল করেনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠি

//দৈনিক বিশ্ব আন্তর্জাতিক ডেস্ক//

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি পাঠিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তাতে তিনি বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে সমর্থনের পাশাপাশি একটি অবাধ ও মুক্ত ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অভিন্ন স্বপ্ন পূরণে অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠায় ঢাকার সঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আজ রোববার সকালে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের কাছে এই চিঠি হস্তান্তর করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো চিঠিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র–বাংলাদেশ অংশীদারত্বের পরবর্তী অধ্যায় শুরুর পর্বে আমি বলতে চাই, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, মানবিক সহায়তা, বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থীসহ আরও অনেক ইস্যুতে আমাদের প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করার ঐকান্তিক ইচ্ছা আমি তুলে ধরছি।’

জো বাইডেন লিখেছেন, ‘সমস্যা সমাধানে একসঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে আমাদের দীর্ঘ ও সফল ইতিহাস রয়েছে। আর আমাদের এই সম্পর্কের ভিত্তি হচ্ছে দুই দেশের জনগণের শক্তিশালী সম্পর্ক।’

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁর চিঠিতে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে সমর্থন এবং একটি অবাধ ও মুক্ত ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অভিন্ন স্বপ্ন পূরণে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত

//দৈনিক বিশ্ব আন্তর্জাতিক ডেস্ক//

আবারও নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ নিয়ে চতুর্থবার তার নাম প্রস্তাব করা হলো। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চতুর্থবারের মতো শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের ঐতিহাসিক নীতির কথা উল্লেখ করে ক্লডিয়া টেনি নামে একজন রিপাবলিকান আইন প্রণেতা সাবেক প্রেসিডেন্টের নাম সামনে আনেন।

ক্লডিয়া টেনির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আব্রাহাম অ্যাকর্ডস চুক্তিতে তার (ট্রাম্পের) ভূমিকার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

এনডিটিভি বলছে, ইসরায়েলের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের সম্পর্কোন্নয়ন চুক্তি তথা আব্রাহাম অ্যাকর্ডস স্বাক্ষরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার জন্য ট্রাম্পের নাম প্রস্তাব করেছেন রিপাবলিকান ওই আইনপ্রণেতা।

২০২০ সালে স্বাক্ষরিত আব্রাহাম অ্যাকর্ডস চুক্তির মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক স্থাপন করে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন। পরে মরক্কো এবং সুদানও একই পথ অনুসরণ করে। ওই চুক্তিতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় ছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

নিউইয়র্কের রিপাবলিকান সদস্য ক্লডিয়া টেনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘প্রায় ৩০ বছরের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম নতুন শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরে ডোনাল্ড ট্রাম্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। কয়েক দশক ধরে আমলা, বৈদেশিক নীতির পেশাদার ব্যক্তিরা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা জোর দিয়ে বলে আসছিল, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের সমাধান ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে কোনও শান্তি চুক্তি অসম্ভব। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তা মিথ্যা প্রমাণ করেছিলেন।’

তার ভাষায়, ‘আমি আজ সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করতে পেরে সম্মানিত এবং এই স্বীকৃতি তার প্রাপ্য।’ সূত্র: এনডিটিভি

জর্ডানে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা করা ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স কারা- ইরান বি জরিত…?

//দৈনিক বিশ্ব আন্তর্জাতিক ডেস্ক//

জর্ডানে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালিয়ে ৩ জন সেনাকে হত্যা ও ৩৪ জনকে আহত করার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে ইরাকভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স। আক্রান্ত মার্কিন ঘাঁটিটি টাওয়ার ২২ হিসেবে পরিচিত। এটি ইরাক ও সিরিয়া সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত। হামলার জন্য ইরান–সমর্থিত জঙ্গিদের দায়ী করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে ইরান এই হামলার জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।

 ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স বলেছে, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের কারণে এই হামলা চালানো হয়েছে। পাশাপাশি ইরাক ও সিরিয়ায় অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের হটানোও তাদের লক্ষ্য।

ইসলামিক রেজিস্ট্যান্সের সঙ্গে ইরান–সমর্থিত মিলিশিয়াদের তেমন ঘনিষ্ঠতা নেই। সশস্ত্র এই গোষ্ঠী গাজায় ইসরায়েলের হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। আটলান্টিক কাউন্সিলের মতে, এই গোষ্ঠীর সদস্যদের পরিচয় স্পষ্ট নয়। ফলে কোনো হামলার পর দায় এড়ানোর সুযোগ পায় গোষ্ঠীর সদস্যরা।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসি বলেছে, প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণ এখানে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডস কোরের সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ইরাক ও সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের ওপর অন্তত ২০টি হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স।

গতকাল রোববার জর্ডানের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলার পরে ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স বলেছে, সিরিয়ার তিনটি স্থানে মার্কিন সেনাদের লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে ইরাক, সিরিয়া ও জর্ডান সীমান্তের নিকটবর্তী দুটি মার্কিন ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা হয়েছে। তবে তাদের হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের তিন সেনা নিহত হয়েছে কি না, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেনি গোষ্ঠীটি।

গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ইরাক ও সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের ওপর অন্তত ২০টি হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স।

তবে সব মিলিয়ে ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন সেনাদের ওপর দেড় শতাধিক হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স। গতকালের হামলার আগপর্যন্ত অন্তত ৭০ মার্কিন সেনা আহত হয়েছেন। যাদের বেশির ভাগেরই মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

টাওয়ার ২২ কীঃ

টাওয়ার ২২ জর্ডানের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থিত। দেশটির উত্তর-পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত এই টাওয়ারের এক পাশে ইরাক, অন্য পাশে সিরিয়া।

তবে এই ঘাঁটি সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি। ঘাঁটিটি আল-তানফ সেনানিবাসের কাছাকাছি। সিরিয়া সীমান্তে অবস্থিত এসব সেনানিবাসে অল্পসংখ্যক মার্কিন সেনা থাকে।

টাওয়ার ২২ জর্ডানের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থিত। দেশটির উত্তর-পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত এই টাওয়ারের একপাশে ইরাক, অন্য পাশে সিরিয়া।

ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে আল-তানফ। এ ছাড়া সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে ইরানের সামরিক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলের অংশ হিসেবে ভূমিকা রেখেছে আল-তানফ ঘাঁটিটি।

টাওয়ার ২২ আল-তানফে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের কাছাকাছি। এটা এমনভাবে গড়ে তোলা হয় যেন প্রয়োজনে একে অন্যদের সহযোগিতা করতে পারে। ওই এলাকায় ইরান-সমর্থিত জঙ্গি দমনেও ভূমিকা রেখেছে টাওয়ার ২২। পাশাপাশি ওই অঞ্চলে আইএসের অবশিষ্ট কেউ থাকলে তাদের নজরদারি করতে মার্কিন সেনাদের সাহায্য করছে ওই ঘাঁটিটি।

২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর জর্ডানে বিস্তৃত নজরদারি পদ্ধতি চালু করতে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করেছে ওয়াশিংটন। সিরিয়া ও ইরাক থেকে জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নেওয়া এই ব্যবস্থা বর্ডার সিকিউরিটি প্রোগ্রাম নামে পরিচিত।

জর্ডানে শত শত মার্কিন প্রশিক্ষক রয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব মিত্র বছরজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের সঙ্গে ব্যাপক মহড়া করে, সেগুলোর মধ্যে জর্ডান অন্যতম।

সীমান্তে প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করতে গত বছর ওয়াশিংটনের কাছে ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী অত্যাধুনিক প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চেয়েছিল আম্মান। এ ছাড়া সিরিয়া সীমান্তে শত শত বিলিয়ন ডলারের মাদক চোরাচালানবিরোধী লড়াইয়ে ড্রোন ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আরও সহায়তা চেয়েছে তারা। এই চোরাচালানের জন্য দক্ষিণ সিরিয়ায় শক্ত অবস্থানে থাকা ইরানপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীকে দায়ী করছে আম্মান।

আটলান্টিক কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, আইএসের অবশিষ্ট অনুসারীদের দমনের জন্য ইরাকে প্রায় আড়াই হাজার ও উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় ৯০০ মার্কিন সেনা রয়েছে।

তবে টাওয়ার ২২-এ কতজন মার্কিন সেনা রয়েছে, সেটি জানা যায়নি। এ ছাড়া তাদের কাছে কী ধরনের অস্ত্র ও আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা রয়েছে এবং হামলার ফলে ক্ষয়ক্ষতি কেমন হয়েছে, সেটিও অজ্ঞাত। সূত্রঃ প্রথম আলো

Daily World News

সেতু নির্মাণে স্পেন প্রতিনিধি দলের সাথে সালাম মূর্শেদী এমপির বৈঠক

রামপালে পুলিশের অভিযানে গাঁজাসহ কারবারি আটক

ডোনাল্ড ট্রাম্প এর জনপ্রিয়তা বাইডেনের চেয়ে অনেক এগিয়ে

 //দৈনিক বিশ্ব আন্তর্জাতিক ডেস্ক//

আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থিতা প্রত্যাশী অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় জনপ্রিয়তার দিক থেকে এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জনপ্রিয়তার হার আগের চেয়ে আরও কমে সর্বনিম্ন পর্যায়ে আছে।

এবিসি নিউজ/ইপসোসের করা নতুন এক জরিপে এমন চিত্র দেখা গেছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে অনুষ্ঠেয় আইওয়া ককাসের এক দিন আগে গতকাল রোববার জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়।

জরিপে দেখা গেছে, তিনটি ক্ষেত্রে রিপাবলিকান প্রার্থিতা প্রত্যাশী রন ডিস্যান্টিস, নিকি হ্যালি, বিবেক রামাস্বামী এবং এসা হাটচিনসনের তুলনায় অনেক বেশি এগিয়ে আছেন ট্রাম্প।

কমপক্ষে ৬৮ শতাংশ রিপাবলিকান সদস্য এবং রিপাবলিকান সমর্থকেরা বলেছেন, ট্রাম্প প্রার্থিতা পেলে নভেম্বরের নির্বাচনে তাঁর নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এ ক্ষেত্রে নিকি হ্যালির প্রতি সমর্থন ১২ শতাংশ, ডিস্যান্টিসের প্রতি সমর্থন ১১ শতাংশ। অন্য প্রার্থিতা প্রত্যাশীদের প্রতি সমর্থনের হার এক অঙ্কের ঘরে।

জরিপে অংশগ্রহণকারী রিপাবলিকান সমর্থকেরা দলটির অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তুলনায় ট্রাম্পকে বেশি ‘বলিষ্ঠ নেতা’ ও প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য ‘সবচেয়ে যোগ্য’ বলে মনে করেন।

সব মিলিয়ে ৭০ শতাংশের বেশি রিপাবলিকান প্রাপ্তবয়স্ক সমর্থক চাইছেন ট্রাম্পকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হোক।

অন্যদিকে ৫৭ শতাংশ ডেমোক্র্যাট সদস্য বাইডেন সম্পর্কে এমন মনোভঙ্গি পোষণ করেন।

জরিপ অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনের জনপ্রিয়তার হার কমে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত ১৫ বছরে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তা এতটা কম ছিল না।

নতুন জরিপে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনের জনপ্রিয়তার হার কমে ৩৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ২০০৬-০৮ সাল থেকে নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টদের জনপ্রিয়তার হারের তুলনায় সর্বনিম্ন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তাঁর জনপ্রিয়তা ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত নামতে দেখা গিয়েছিল। জরিপে অংশগ্রহণকারী ডেমোক্র্যাট সদস্যদের ৫৮ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে সমর্থন করেন না।

জরিপে দেখা গেছে, নারীদের মধ্যেও বাইডেনের জনপ্রিয়তা আরও কমেছে। জরিপে অংশ নেওয়া নারীদের প্রায় ৩১ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে সমর্থন করেন। ২০২০ সালের জরিপে ৫৭ শতাংশ নারীর সমর্থন পেয়েছিলেন তিনি। নতুন জরিপে ৩৪ শতাংশ পুরুষ বলেছেন, তাঁরা প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনকে সমর্থন করেন।

কৃষ্ণাঙ্গ ও হিস্পানিক ভোটারদের মধ্যেও বাইডেনের প্রতি আশাব্যঞ্জক সমর্থন দেখা যায়নি।

রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে সম্ভাব্য দুই প্রার্থী হিসেবে বাইডেন ও ট্রাম্পের মধ্যে তুলনার ভিত্তিতে ওই জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সততা ও বিশ্বাসযোগ্যতার দিক থেকে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন বাইডেন। এ ক্ষেত্রে বাইডেন সমর্থন পেয়েছেন ৪১ শতাংশের আর ট্রাম্প সমর্থন পেয়েছেন ২৬ শতাংশের। তবে ‘মানসিক ক্ষিপ্রতা’ ও ‘শারীরিক সক্ষমতা’র বিবেচনায় আবারও প্রেসিডেন্ট হওয়ার ক্ষেত্রে বাইডেনের চেয়ে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থনের হার বেশি।

আপানিও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা মূল্যে পড়তে পারেন এই অনলাইন কোর্স

//দৈনিক বিশ্ব আন্তর্জাতিক ডেস্ক//

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ডে ইচ্ছা করলেই পড়তে পারবেন যে কেউ। এ জন্য পকেট থেকে খসবে না এক পয়সাও। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বজুড়ে শিক্ষার্থীদের ফ্রি পড়ার এ সুযোগ দিচ্ছে অনলাইন কোর্সের মাধ্যমে। বিভিন্ন বিষয়ের প্রায় ৪০টির বেশি কোর্স অনলাইনে পড়ার সুযোগ দিচ্ছে তারা। এ পড়াশোনার জন্য কোনো কোনো কোর্সে কোনো ডিগ্রিগত যোগ্যতাও লাগবে না। সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে বাড়িতে বসে যে কেউ করতে পারবেন এসব কোর্স। তবে শুধু পড়া শেষে সার্টিফিকেট পেতে গেলে লাগবে অর্থ।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন কোর্সগুলোর মধ্যে রয়েছে কম্পিউটার সায়েন্স, হেলথ অ্যান্ড মেডিসিন, ম্যাথমেটিকস, প্রোগ্রামিং, এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেইনিং, আইটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, বিজনেস, ডেটা সায়েন্স, হিউম্যানিটিজ, কম্পিউটার সায়েন্স, সোশ্যাল সায়েন্স-সংক্রান্ত বিবিধ বিষয়। কোর্সগুলোর সময়সীমা ৪ থেকে ১৫ সপ্তাহের। কোর্সগুলোর কারিকুলাম তৈরি করেছেন হার্ভার্ডের সেরা শিক্ষকেরাই।

তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক পাঠ্যক্রমগুলোতে টু-ডি এবং থ্রি-ডি গেম ডেভেলপমেন্ট থেকে বিভিন্ন ওয়েব ও মোবাইল অ্যাপের প্রযুক্তি শেখার ব্যবস্থা রয়েছে। বিজনেস বিভাগে ইমার্জিং ইকোনমিকস, কন্ট্রাক্ট ল এবং অ্যাকাউন্টিং ও ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট বিষয়ে তিনটি প্রাথমিক কোর্স রয়েছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিংয়ের এই যুগে ১৪টি অনলাইন কোর্স করাচ্ছে হার্ভার্ড ডেটা সায়েন্স বিভাগ।

চীন ও কমিউনিজম এবং আধুনিক চীন-তাইওয়ান, হংকং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলেও, সে ব্যবস্থা রেখেছে ১৬৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়। আছে শেক্‌সপিয়ার নিয়ে পড়ার আয়োজনও।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্রি কয়েকটি কোর্স হলো—

  • CS50’s Understanding Technology: কোর্সটি তাঁদের জন্য তৈরি, যাঁ প্রতিদিন প্রযুক্তি ব্যবহার করেন কিন্তু এর পেছনের বিজ্ঞান সম্পর্কে অবগত নন। কোর্সটির সময়সীমা ছয় সপ্তাহ। এই কোর্সটি করার পর শিক্ষার্থীরা আরও ভালোভাবে প্রযুক্তি বহার করতে পারবেন। এ কোর্সের মধ্যে হার্ডওয়্যার, ইন্টারনেট, মাল্টিমিডিয়া, সিকিওরিটি, প্রোগ্রামিং ও ওয়েব ডেভেলপমেন্টের মতো বিষয় পড়ানো হবে।
  • CS50’s Introduction to Programming with Scratch: ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ Scratch-এর মাধ্যমে যে যে শিক্ষার্থীরা প্রোগ্রামিংয়ের কিছুই জানেন না, তাঁরা নিজেদের অ্যানিমেশন, গেমস, ইন্টারঅ্যাক্টিভ আর্ট ও স্টোরি তৈরি করতে পারবেন। এ কোর্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থী প্রোগ্রামিংয়ের মূল বিষয়বস্তুগুলো এবং জাভা ও পাইথনের মতো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন। তিন সপ্তাহের এ কোর্সে শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামিংয়ের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শেখানো হবে। এ কোর্সের ফলে ভবিষ্যতে আরও জটিল প্রোগ্রামিং কোর্স করতে সক্ষম হবেন শিক্ষার্থীরা।
  • CS50’s Introduction to Computer Science: এটি একটি শুরুর পর্যায়ের একটি কোর্স। এ কোর্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কম্পিউটারের নানা সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। এ কোর্সটি ১১ সপ্তাহ ধরে চলবে।
  • CS50’s Introduction to Game Development: এই কোর্সের মাধ্যমে টুডি (2D) ও থ্রিডি (3D) ইন্টারআক্টিভ গেম ডেভেলপ ও ডিজাইন করতে শেখানো হবে। পোকেমন ও অ্যাংগ্রি বার্ডসের মতো গেমস তৈরির উপায় সেখানো হবে এ কোর্সে। কোর্সের সময়সীমা ১২ সপ্তাহ।
  • CS50’s Introduction to Artificial Intelligence with Python: এ কোর্সের মাধ্যমে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) নতুন ধারনাগুলো শেখানো হবে। কোর্সে এআইয়ের ব্যবহার শিখবে শিক্ষার্থীরা। কোর্সের মেয়াদ সাত সপ্তাহ।
  • 4P Model for Strategic Leadership Podcasts: এ কোর্সে লিডারশিপ, পলিটিক্যাল সায়েন্স, সরকার, পাবলিক পলিসি সম্পর্কে শেখানো হবে। কোর্সের মেয়াদ ৪ সপ্তাহ।

বাংলাদেশ নিয়ে কেন চীন-রাশিয়া-আমেরিকার এত আগ্রহ….!

//দৈনিক বিশ্ব ডেস্ক//

বিশ্বের নতুন রাজনৈতিক মেরুকরণে বাংলাদেশ বৃহৎ শক্তিধর দেশগুলোর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে কী না তা নিয়ে নানা মত আছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করেন- বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান, সম্ভাবনাময় অর্থনীতি এবং বঙ্গোপসাগরের প্রতি বৈশ্বিক আগ্রহ – এসব কারণে রাজনৈতিক মেরুকরণের নতুন ক্ষেত্র হচ্ছে বাংলাদেশ। এর সাথে দ্বিমতও আছে। বিশ্লেষকদের আরেকটি অংশ মনে করছেন, বাংলাদেশ নিয়ে শক্তিধর দেশগুলোর আগ্রহ থাকলেও সেটা খুব বেশি নয়।

বাংলাদেশ নিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং রাশিয়া যেসব তৎপরতা এবং বক্তব্য দিয়েছে তাতে মেরুকরণের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

আসন্ন সাধারন নির্বাচন নিয়ে বর্তমান সরকারের উপর যুক্তরাষ্ট্রর চাপ দৃশ্যমান হলেও চীন এবং রাশিয়ার অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে রাশিয়া ও চীনের বিরোধ এখন দৃশ্যমান। এর প্রভাব বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও পড়ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

আমেরিকা কী চায়?

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর মনে করেন, বাংলাদেশ আসলে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়ার নতুন ‘মেরুকরণের ক্ষেত্র’ হয়ে উঠেছে।

তার বিশ্লেষণ হচ্ছে , বাইডেন প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতির একটি অংশ হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার’ পক্ষে কাজ করা। এরই অংশ হিসেবে তারা বাংলাদেশের বিষয়ে আগ্রহী হয়েছে।

দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, আমেরিকার একটা ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল আছে যেটি সক্রিয়ভাবে কার্যকর করতে তারা মনোনিবেশ করেছে। এ কারণেই এশিয়া অঞ্চলে বন্ধু সংগ্রহে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র।

“আমেরিকার লক্ষ্য চীন-রাশিয়া বলয় থেকে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক বিশ্বের বলয়ের সাথে সংযুক্ত করা বা সংযুক্তিকে আরো শক্তিশালী করা,” বলেন মি. কবীর।

কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত দেশগুলোও চায় বাংলাদেশে যাতে গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়। একই সাথে এসব দেশে বাংলাদেশকে যেসব সুবিধা, বিশেষ করে বাণিজ্য সুবিধা দেয়া হয়, তার পেছনে মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শক্তিশালী রাখা।

কোভিড ও ইউক্রেন যুদ্ধের পর যেহেতু এই অঞ্চলে ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীতা বাড়ছে, তাই এই দেশগুলো বিশেষ করে চীন ও রাশিয়ার মধ্যে আদর্শগত মিল বাড়ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আমেরিকা বা পাশ্চাত্যের সাথে যেহেতু তাদের আদর্শগত মিল নেই তাই তারাও এই অঞ্চলে বন্ধু সংগ্রহে আগ্রহী।

আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা এখানে মূল বিষয় হিসেবে কাজ করছে বলে মনে করেন তিনি।

“আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোকে আমরা খুব সংগঠিতভাবে ব্যবস্থা না করার সুযোগটা রাশিয়া-চীন নেয়ার চেষ্টা করছে এবং এ কারণেই আমরা বাংলাদেশকে ঘিরে এই তিন-চার কেন্দ্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা বেশি দেখতে পাচ্ছি।”

সবার কাছে গুরুত্বপূর্ণ?

এদিকে চীন বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী। বাংলাদেশের অবকাঠামো নির্মাণে চীন ব্যাপকভাবে কাজ করছে। চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক মূলত অর্থনৈতিক।

রাশিয়ার সাথেও বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেকটা একই রকম। বাংলাদেশে পারমানবিক বিদ্যুৎখাতে রাশিয়ার বড় বিনিয়োগ রয়েছে। এছাড়া রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কও রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে রাশিয়া বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। এছাড়া এই দেশটি থেকে বাংলাদেশ খাদ্য শস্যও আমদানি করে থাকে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাব এনাম খান মনে করেন, বাংলাদেশ না চাইলেও ভূ-কৌশলগত অবস্থানের কারণে স্বাভাবিকভাবেই সবার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

তিনি মনে করেন, গত বেশ কিছু বছর ধরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশ অগ্রগামী ছিল। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কোভিড পরবর্তী সময়েও বেশ স্থিতিশীল ছিল যা একে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির সাথে সম্পৃক্ত করেছে।

“বাংলাদেশ একদিকে চীন থেকে ব্যাপক আমদানি করে এবং অন্যদিকে আবার পশ্চিমা দেশগুলোতে রপ্তানিও করে। ফলে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে স্বার্থের একটা ভারসাম্য বাংলাদেশ রক্ষা করে আসছে,” বলেন মি. খান।

কানাডাভিত্তিক অনলাইন প্রকাশনা ‘ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট’ অনুসারে, বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন যদি ধরে রাখা যায় তাহলে মধ্যম শক্তিশালী দেশ হয়ে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। একই সাথে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বড় বাজারও। যার কারণে এর প্রতি সুপার পাওয়ার দেশগুলো বিনিয়োগের আগ্রহ বেড়েছে।

এর পাশাপাশি বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের অংশ যা ভারত মহাসাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগরকে যুক্ত করেছে। ফলে এটি অনেকটা ‘স্ট্রাটেজিক লাইন অব কমিউনিকেশন’ বা ‘সাপ্লাই লাইন অব কমিউনিকেশন’ হয়ে উঠেছে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এই শিক্ষক।

এ কারণে বঙ্গোপসাগেরের গুরুত্ব অনেক।

ভিন্ন ব্যাখ্যাও আছে

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং সমর বিশেষজ্ঞ ড. সৈয়দ মাহমুদ আলী সৈয়দ মাহমুদ আলী মনে করেন, চীন-রাশিয়া-আমেরিকার দ্বন্দ্বে বাংলাদেশ আসলে ‘গৌণ বা উপলক্ষ্য’ মাত্র।

তার মতে, বাংলাদেশের মেরুকরণের ক্ষেত্রে পরিণত হওয়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে চীন ও রাশিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আর ঘনিষ্ঠতর হওয়া এবং এর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আমেরিকার অবস্থান।

“স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ৯০ এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার পর সারা বিশ্বে ইউনিফর্ম বা একক পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তাদের সেই আধিপত্য পরবর্তী ২৫ বছর পর্যন্ত চলেছে,” বলেন মি. আলী।

দ্বিতীয় পর্যায়ের শক্তিশালী দেশ ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন, এরা সবাই তখন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রপক্ষের দেশ ছিল। বিপক্ষে কেউ না থাকার কারণে আমেরিকা প্রায় প্রতিদ্বন্দ্বীহীন ছিল।

মি. আলীর বিশ্লেষণ হচ্ছে, ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া রাশিয়ার অন্তর্ভূক্ত হওয়া এবং দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সামরিক শক্তি বাড়ানোর মতো ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে স্পষ্ট হয়ে আসে যে যুক্তরাষ্ট্র আর একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখতে পারছে না। এরপর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন-রাশিয়ার মধ্যে একধরণের প্রতিদ্বন্দ্বিতা সামনে আসে।

“যেহেতু ক্ষমতার একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা এই তিনটি রাষ্ট্রের মধ্যে চলছে, তাই বলা যেতে পারে বাংলাদেশ একটি গৌণ বা পরোক্ষভাবে একটি প্রতিদ্বন্দ্বীতার কেন্দ্র বা স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে,” বলেন মি. আলী। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

 

হান্টার বাইডেন অস্ত্র মামলায় অভিযুক্ত ডেলাওয়্যারের একটি আদালতে

//আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক//

মামলায় অভিযুক্ত হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেন। তাকে আগ্নেয়াস্ত্র-সংক্রান্ত এক মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার একটি আগ্নেয়াস্ত্র কেনার সময় মিথ্যা বলার তিনটি ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগে হান্টারকে অভিযুক্ত করা হয়।

দোষ স্বীকার করে মামলা নিষ্পত্তির একটি প্রস্তাবিত চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার পর ৫৩ বছর বয়সি হান্টারকে অভিযুক্ত করা হলো।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই প্রথম ক্ষমতাসীন কোনো প্রেসিডেন্টের সন্তান ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হলেন।

আর এর মধ্য দিয়ে হান্টারই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের সন্তান হিসেবে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হলেন।

যুক্তরাষ্ট্র ডেলাওয়্যারের একটি আদালতে হান্টারকে অভিযুক্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক এ অভিযোগ আনেন বিশেষ কৌঁসুলি ডেভিড ওয়েইস।

অভিযোগে বলা হয়, ২০১৮ সালের অক্টোবরে ডেলাওয়্যারে একটি আগ্নেয়াস্ত্রের দোকান থেকে একটি রিভলবার কিনেন বাইডেনের ছেলে হান্টার। সেটি কেনার সময় তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তিনি কোনো উত্তেজক মাদকদ্রব্যের বেআইনি সেবক নন। তিনি মাদকাসক্তও নন। অথচ সে সময় তিনি মাদক (কোকেন) সেবক ছিলেন।

মার্কিন ফেডারেল আইন অনুসারে, আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয়ের সময় বাধ্যতামূলকভাবে কিছু তথ্য দিতে হয়। আর এ সময় মিথ্যা বলা অপরাধ। সেই সঙ্গে মাদক ব্যবহারকালে আগ্নেয়াস্ত্র রাখাও অপরাধ।

মার্কিন বিচার বিভাগের বিবৃতির তথ্যানুযায়ী, মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ২৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে হান্টারের। সূত্র: সিএনএন, নিউ ইয়র্ক টাইমস