//পলাশ চন্দ্র দাস, বরিশাল//
বরিশাল নগরীর কাউনিয়ায় নতুন বাজার আদি শ্মশানে অনুষ্ঠিত দিপালী উৎসবকে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় শ্মশান দিপালী উৎসব মনে করা হয়।
চতুর্দশি পূণ্য তিথিতে বরিশালে আজ (বুধবার) সন্ধ্যায় শুরু হবে কাউনিয়ার নতুন বাজার আদি শ্মশানের এই দিপালী উৎসব। সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব সম্পন্ন করতে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে পুরো শ্মশান এলাকা। রয়েছে সিসি ক্যামেরার নজরদারি উৎসব চলাকালে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে শতাধিক পুলিশ সদস্য পাশাপাশি টহলে থাকবে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান র্যাব ও গোয়েন্দা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন মহা শ্মশান রক্ষা কমিটির আহবায়ক মানবেন্দ বট্যাবেল ।
এই কমিটির নিজস্ব ১শ স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালনে থাকবে বলেও জানান তিনি। প্রতি বছরের মতো এবারও ভারত, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মৃতদের স্বজনরা এই উৎসবে অংশ নিবেন। শ্মশান রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব বিশিষ্ট সাংবাদিক সুশান্ত ঘোষ বলেন, ২০৫ বছর ধরে চলা এই মহাশ্মশানে কাঁচা পাকা সমাধি মিলিয়ে প্রায় ৭০ হাজার সমাধি রয়েছে। এ মুহূর্তে সমাধিগুলোকে রংতুলির আঁচড়ে নতুন করে সাজানো হচ্ছে। তবে সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন, পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের বৈঠক শেষে তারা সর্বাত্মক সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন।
তিনি জানান, উৎসবের রাতকে শ্মশান এলাকা হাজারো প্রদীপ প্রজ্জলনে রাতকে দিনের আলোতে নিয়ে আসা হবে। কবি জীবনানন্দ দাশের পিতা সত্যানন্দ দাশগুপ্ত, পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত, ব্রিটিশবিরোধী নেতা বিপ্লবী দেবেন ঘোষ, বিশিষ্ট দানবীর অমুত লাল দে, মনোরমা বসু মাসিমাসহ বহু খ্যাতিমান মানুষের সমাধি রয়েছে এই মহাশ্মশানে। বরিশাল নগরীর কাউনিয়াস্থ মহা-শ্মশান ঘুরে দেখা গেছে, প্রিয়জনদের সমাধীতে নতুন ভাবে সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্বজনরা। কেউবা মাটির সমাধী তৈরী করছেন, কেউ আবার পাকা সমাধীতে রংঙের আচর দিচ্ছেন। মা-বাবার সমাধিতে সাজ সজ্জার কাজ করতে আশা নগরীর ভাটিখানা নিবাসী শিপ্রা জানান। বছরের অন্যান্য সময় শ্মশানে এলেও দিপালী উৎসব উপলক্ষে তিনি তার প্রয়াত মা-বাবা, ঠাকুরমার সমাধীতে নতুন রূপে সাজাতে এসেছেন।নগরীর ভাটিখানার আরেক স্বজন গবিন্দ দাস নাথু বলেন, তিনি তার বাবা-মার সমাধী তৈরী করতে এসেছেন।
যাতে দিপালী উৎসবের দিন সেখানে পূজা অর্চনা করতে পারেন। এদিকে শ্মশানে অনেক সমাধী রয়েছে যার কোন স্বজন এখানে আসেন না কিংবা কেউ হয়তো বেঁচেও নেই। তাদের সমাধীতে শ্মশান কমিটির পক্ষ থেকে রংঙের কাজ করা হচ্ছে।বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী বুধবার দুপুর ১:১২ মিনিটে ভু-চতুর্দশী শুরু হবে এবং বৃহস্পতিবার দুপুর ৩:৫২ মিনিটে শেষ হবে রাত ১২.১ মিনিটে শশ্মান কালিপূজা শুরু হবে।